ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

শত বর্ষে কুতুবদিয়া থানা

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কুতুবদিয়া থেকে ফিরে ::

প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরনো কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপ। বঙ্গোপসাগরের মাঝে এটি অবস্থিত হওয়ায় কুতুবদিয়া দ্বীপকে ‘সাগর কন্যা’ নামেও অবিহিত করা হয়। ব্যবসা-বানিজ্যে সমূদ্রে জাহাজ চলাচলে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের কাছে এ দ্বীপ ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার দৃষ্টি নন্দন বিখ্যাত কুতুবদিয়া বাতিঘর নির্মাণ করেন। ইতিহাসে এ “বাতিঘর” নামেই কুতুবদিয়ার পরিচিত। বিখ্যাত আউলিয়া হজরত কুতুব উদ্দিন আউলিয়া (রহ:) এর নামে দ্বীপ কুতুবদিয়ার নামকরণ হয়েছে বলে কথিত রয়েছে। দ্বীপের আইন-শৃংখলা,শান্তি, প্রগতি রক্ষার প্রয়োজনে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার এ দ্বীপে ১৯১৭ সালে পুলিশ ষ্টেশন (থানা) স্থাপন করেন। থানা প্রতিষ্ঠার সুনির্দিষ্ট তারিখ জানা না গেলেও ইতিহাসবিদদের মতে ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কুতুবদিয়া থানা। আর চলতি বছরের ডিসেম্বরেই ১০০ বছর পূর্ণ হলো কুতুবদিয়া থানা প্রতিষ্ঠার।

কুতুবদিয়া থানা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এক‘শ বছরে ৩৫ জন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দায়িত্ব পালন করেছেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অনেকেই পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশংসা নিয়ে গেছেন। যাদের মধ্যে খোদা বক্স আকন্দ, মাঈন উদ্দিন ভূইয়া, নেসার আহমেদ, অং সা থোয়াই সহ বর্তমান ওসি মোহাম্মদ দিদারুল ফেরদাউস উল্লেখ্যযোগ্য। সরকারি দায়িত্ব পালনে ওসি আসে আর ওসি যায়। তবে এক‘শ বছর যেমন উত্তীর্ণ কুতুবদিয়া থানা, তেমনি শতবর্ষের বর্তমান সময়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে ব্যতিক্রম ভূমিকা নেন ওসি দিদারুল ফেরদাউস। রাতারাতি গজিয়ে ওঠা ইয়াবা ব্যবসায়ি, জলদস্যু আটকে ইতিমধ্যে তিনি সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। যার দারুণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা ও জলদস্যু উৎপাত।

অপর দিকে থানার শত বর্ষ পূর্তির বছরে কুতুবদিয়াকে পর্যটন বিকাশে মহা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী। অতীতে কেউ এটি হাতে নেননি। বিশাল বাজেটের পর্যটন দ্বীপ গড়তে অর্থাৎ বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে তিনিও অনেকটা সফলও হয়েছেন। থানার শুভ শতবর্ষকে উদ্যাপনের লক্ষ্যে আজ ৩০ ডিসেম্বর (শনিবার) নানা আয়োজন হাতে নিয়েছেন দু‘কর্মকর্তা।

কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দিদারুল ফেরদাউস বলেন, কুতুবদিয়া থানা শতবর্ষ পূর্তিতে স্মরণীয় করতে দিনব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। র‌্যালী, আলোচনা সভা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, বর্ণিল আতশবাজি, আলোকজ্জল ইত্যাদি থাকছে। এ ছাড়া দেশ-বিদেশে সাগর কন্যা কুতুবদিয়াকে পর্যটন বিকাশের দ্বার তুলে ধরতে দ্বীপের বিভিন্ন আকর্ষনীয় স্পট তুলে ধরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একটি স্মরণিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: